আড়াই মাসের শিশু উম্মে হাবীবার জন্মনিবন্ধন করতে ইউনিয়ন পরিষদে যান তার মা মোরশেদা বেগম (৩০)। নিয়ম অনুযায়ী জন্মনিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত সরকারি ফি ২৫ টাকা হলেও মোরশেদাকে সেখানকার ইউপি সচিব জানান ‘যত বয়স তত টাকা দিতে হবে’। তাই তার আড়াই মাস বয়সী শিশুর জন্য দিতে হয়েছে ২৫০ টাকা। তবুও গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) থেকে রোববার (১৫ জানুয়ারি) পর্যন্ত মেলেনি শিশুটির জন্ম নিবন্ধন।
ঘটনাটি কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার উত্তর খোশবাস ইউনিয়নের। ভুক্তভোগী মোরশেদা ওই ইউনিয়নের আরিফপুর গ্রামের আল আমিনের স্ত্রী। রোববার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে তিনি ঢাকা পোস্টকে এসব কথা জানান।
মোরশেদা জানান, রোববার ইউনিয়ন পরিষদে গেলে সচিব জানান উম্মে হাবীবা নামে জন্ম নিবন্ধন হবে না। এই নামে অন্য কেউ নিবন্ধন করেছে। বাবা এবং মায়ের নামও মিলে গেছে, তাই হাবীবা নাম পাল্টে ফেলতে বলা হয়। তাই হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরেছি। তবে জন্মনিবন্ধন ফি বাবদ রাখা ২৫০ টাকা আর ফেরত দেয়নি।
২৫০ টাকার রিসিট
উত্তর খোশবাস ইউনিয়ন পরিষদের সচিব তফাজ্জল হোসেন ঢাকা পোস্টের কাছে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, সার্ভারে শিশুর নাম, বাবা-মায়ের নাম মিলে যাওয়ায় তার নিবন্ধন করা যায়নি। তবে আমরা তার কাছ থেকে যে ২৫০ টাকা নিয়েছি সেটা ফেরত দেব অথবা নাম পরিবর্তন করলে নিবন্ধন করে দেব।
উত্তর খোশবাস ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান সর্দার ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফি কিছুটা বেশি নেওয়া হয় সত্য। পরিষদে এই কাজগুলো যারা করছেন তাদের কোনো সরকারি বেতন নেই, লোকটা অনেক পরিশ্রম করে কাজগুলো করে, তার ইন্টারনেট, প্রিন্টারের কালি, বিদ্যুৎ বিল দিতে হয়। তাই কিছু টাকা বেশি নেওয়া হয়। আমি সচিব এবং উদ্যোক্তাকে নির্দেশ দিয়েছি রিসিটের মাধ্যমে যেন টাকা আদায় করা হয়। না হলে দালালরা মানুষের কাছ থেকে ১০০০- ১৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়। নাম, বাবা-মায়ের নাম মিলে গেলেও ইউএনও স্যার সাইন করলেই তার জন্ম নিবন্ধন হবে।
বরুড়া উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী অফিসার মেহেদী হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, ইউনিয়ন পরিষদ চলে ইউনিয়ন পরিষদের বিধি অনুযায়ী। আমাকে আগে দেখতে হবে বিধির বাইরে কোনো অনিয়ম হয়েছে কিনা। হয়ে থাকলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসনের স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক অর্পণা বৈদ্য ঢাকা পোস্টকে বলেন, জন্মনিবন্ধনের সরকারি ফি ২৫ টাকা। এর বাইরে নেওয়ার সুযোগ নেই। আমি খোঁজ নিচ্ছি। অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর শিশুর নাম, অভিভাবকের নাম মিলে যাওয়ার বিষয়টি আমি দেখছি।